০৯:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

উখিয়ার বাজারে তরমুজের প্রচুর সরবরাহ: দাম নাগালের বাইরে: প্রশাসনিক অভিযান জরুরী! 

  • শ.ম.গফুর::
  • আপডেট সময়: ০৩:৫১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫
  • 32

এখন তরমুজের ভর মৌসুম চলছে।শীতের শেষে গ্রীষ্মের আগমনী ডাক।তেমনি মুহুর্তে বাজারে রসালো ফল তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে, কিন্তু দামে কম নেই। সারাদিন রোজায় থাকা মানুষ এই ফল খাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন।কারণ এর উপকারিতা অনেক। এটি পানিশূন্যতা দূর করে থাকে। গরমের সময়ে রোজায় এক গ্লাস তরমুজের রস খাওয়ার ফলে শরীর সতেজ হয়ে যায়। কিন্তু বাজার থেকে এই তরমুজ কিনতেই যত বিপাকে পড়তে হয় ভোক্তাদের। অতিরিক্ত লাভের আশায় অনেক অসাধু ব্যবসায়ী পরিপক্ব হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে বাজারজাত করে থাকেন তরমুজ।

এখন একেবারে পুরোদমে পরিপক্ব বললে অতৃপ্ত হবেনা।সাধারণত বাজারে মিষ্টি ও রসালো তরমুজের চাহিদা থাকে বেশি। কিন্তু কোন? তরমুজটি মিষ্টি ও রসালো তা চেনা সহজ নয়। অনেক সময়ই তরমুজ কিনে বাসায় ফেরার পর দেখা যায় তা রসহীন ও ফ্যাকাসে দেখায়।এরপরও দাম যেনো ভোক্তাদের নাগালের বাইরে।

এবার রোজার প্রথম দিন থেকেই উখিয়ায় বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে। তাই ইফতারে তরমুজের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারেও রয়েছে প্রচুর তরমুজ। কিন্তু চড়া দামের কারণে সাধারণ মানুষের তরমুজ কেনা দুষ্কর হয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে মরিচ্যা, কোর্টবাজার,সোনার পাড়া,উখিয়া দারোগা বাজার,কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার সয়লাব তরমুজে। এসব এলাকায় আগে যারা সবজি বিক্রি করতেন তারাই এখন তরমুজ বিক্রি করছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী তরমুজের জোগান থাকলেও চড়া দাম হাঁকান বিক্রেতারা। তাই কেউ কেউ দরদাম করে তরমুজ কিনছেন, আবার অনেকে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।আবার অনেকেই অতিরিক্ত মুনাফালোভী তরমুজ বিক্রেতাদের সাথে দর কষাকষিতেই বাকবিতন্ডায় জড়াচ্ছেন।তেমনিই চিত্র দেখা গেছে উখিয়ার অনেক বাজারে।উখিয়ার কুতুপালং বাজার এলাকায় ফলের আড়তে গিয়েও দেখা যায় প্রচুর তরমুজ আছে। বেশ কয়েকজন আড়তদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঝারি সাইজের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছেন ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। বড় সাইজের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায়। ওই হিসাবে মাঝারি সাইজের প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বড় সাইজের এক পিস তরমুজের দাম পড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ক্রেতাদের একটি ছোট সাইজের তরমুজ কিনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। মাঝারি সাইজের তরমুজের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বড় সাইজের তরমুজের দাম রাখা হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।গরমের কারণে সবাই ইফতারে এক টুকরো তরমুজ রাখতে চান। তাই সুযোগ বুঝে খুচরা বিক্রেতারা তরমুজের চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। কুতুপালং বাজারের অধিকাংশ খুচরা ব্যাবসায়ী রোহিঙ্গা। তারা লাভের পরিমাণ বেশী গুণেন।নির্লজ্জের মত দাম হাকাঁচ্ছেন।

কুতুপালং এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রমজানের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় তরমুজের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এখন তরমুজের সিজন শুরু হয়েছে। তাই তুলনামূলক দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু এখন ছোট সাইজের একটি তরমুজ কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকায়। তাই এ ব্যাপারে খুচরা বাজারে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা দরকার।

মরিচ্যার পাগলির বিল এলাকার বাসিন্দা বাবুল মিয়া মাহমুদ বলেন, পুরো বাজারে যেদিকে তাকাই শুধু তরমুজ আর তরমুজ। কোনো জিনিস বাজারে বেশি থাকলে তার দাম কম থাকার কথা। কিন্তু এই রমজানে উখিয়ায় তরমুজের বাজারে হয়েছে উল্টো। বাজারে তরমুজ যেমন বেশি, দামও তেমন বেশি। একটি বড় সাইজের তরমুজ দাম চাচ্ছে ৭০০টাকা। আবার ছোট তরমুজ নিলে আমার হবে না কারণ আমার পরিবারে সদস্য বেশি। তাই আর তরমুজ কেনা হয়নি আজকের মত।

এদিকে তরমুজের চাহিদা অনুযায়ী জোগান থাকার পরও কেন তরমুজ চড়া দামে বিক্রি করছেন এ প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা। বেশ কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, দাম কেন বেশি বলা যাবে না। এই দামে তরমুজ নিতে পারলে আসেন। বাজারে তরমুজ আনতে গাড়ী ভাড়া,লেভার,ইজারাদারের টোল,হাসিল সব মিলিয়ে বাড়তি দাম পড়ে,তাই বিক্রি করতেও বাড়তি।

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইন্সট্রাক্টর নুরুল আলম বলেন, ‘আমরা প্রথম রমজান থেকে সয়াবিন তেল নিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে ছিলাম। এরপর লেবু নিয়ে কাজ করেছি।এরপর ইফতার সামগ্রী ও খাদ্যদ্রব্য নিয়ে কাজ করছি।তরমুজের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। তবে এখন যেহেতু জেনেছি। এ বিষয়ে আমরা বাজার মনিটরিং করব।

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

উখিয়ায় মালিকবিহীন ১লাখ ৪০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ!

উখিয়ার বাজারে তরমুজের প্রচুর সরবরাহ: দাম নাগালের বাইরে: প্রশাসনিক অভিযান জরুরী! 

আপডেট সময়: ০৩:৫১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

এখন তরমুজের ভর মৌসুম চলছে।শীতের শেষে গ্রীষ্মের আগমনী ডাক।তেমনি মুহুর্তে বাজারে রসালো ফল তরমুজের সরবরাহ বেড়েছে, কিন্তু দামে কম নেই। সারাদিন রোজায় থাকা মানুষ এই ফল খাওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন।কারণ এর উপকারিতা অনেক। এটি পানিশূন্যতা দূর করে থাকে। গরমের সময়ে রোজায় এক গ্লাস তরমুজের রস খাওয়ার ফলে শরীর সতেজ হয়ে যায়। কিন্তু বাজার থেকে এই তরমুজ কিনতেই যত বিপাকে পড়তে হয় ভোক্তাদের। অতিরিক্ত লাভের আশায় অনেক অসাধু ব্যবসায়ী পরিপক্ব হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে বাজারজাত করে থাকেন তরমুজ।

এখন একেবারে পুরোদমে পরিপক্ব বললে অতৃপ্ত হবেনা।সাধারণত বাজারে মিষ্টি ও রসালো তরমুজের চাহিদা থাকে বেশি। কিন্তু কোন? তরমুজটি মিষ্টি ও রসালো তা চেনা সহজ নয়। অনেক সময়ই তরমুজ কিনে বাসায় ফেরার পর দেখা যায় তা রসহীন ও ফ্যাকাসে দেখায়।এরপরও দাম যেনো ভোক্তাদের নাগালের বাইরে।

এবার রোজার প্রথম দিন থেকেই উখিয়ায় বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে। তাই ইফতারে তরমুজের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারেও রয়েছে প্রচুর তরমুজ। কিন্তু চড়া দামের কারণে সাধারণ মানুষের তরমুজ কেনা দুষ্কর হয়ে পড়ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে মরিচ্যা, কোর্টবাজার,সোনার পাড়া,উখিয়া দারোগা বাজার,কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাজার সয়লাব তরমুজে। এসব এলাকায় আগে যারা সবজি বিক্রি করতেন তারাই এখন তরমুজ বিক্রি করছেন। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী তরমুজের জোগান থাকলেও চড়া দাম হাঁকান বিক্রেতারা। তাই কেউ কেউ দরদাম করে তরমুজ কিনছেন, আবার অনেকে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।আবার অনেকেই অতিরিক্ত মুনাফালোভী তরমুজ বিক্রেতাদের সাথে দর কষাকষিতেই বাকবিতন্ডায় জড়াচ্ছেন।তেমনিই চিত্র দেখা গেছে উখিয়ার অনেক বাজারে।উখিয়ার কুতুপালং বাজার এলাকায় ফলের আড়তে গিয়েও দেখা যায় প্রচুর তরমুজ আছে। বেশ কয়েকজন আড়তদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মাঝারি সাইজের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছেন ২৮ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। বড় সাইজের ১০০ পিস তরমুজ বিক্রি করছেন ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকায়। ওই হিসাবে মাঝারি সাইজের প্রতি পিস তরমুজের দাম পড়ে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বড় সাইজের এক পিস তরমুজের দাম পড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে ক্রেতাদের একটি ছোট সাইজের তরমুজ কিনতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে ২০০ টাকায়। মাঝারি সাইজের তরমুজের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বড় সাইজের তরমুজের দাম রাখা হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।গরমের কারণে সবাই ইফতারে এক টুকরো তরমুজ রাখতে চান। তাই সুযোগ বুঝে খুচরা বিক্রেতারা তরমুজের চড়া দাম হাঁকাচ্ছেন বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। কুতুপালং বাজারের অধিকাংশ খুচরা ব্যাবসায়ী রোহিঙ্গা। তারা লাভের পরিমাণ বেশী গুণেন।নির্লজ্জের মত দাম হাকাঁচ্ছেন।

কুতুপালং এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রমজানের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় তরমুজের দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিয়েছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এখন তরমুজের সিজন শুরু হয়েছে। তাই তুলনামূলক দাম কম হওয়ার কথা। কিন্তু এখন ছোট সাইজের একটি তরমুজ কিনতে হচ্ছে ২০০ টাকায়। তাই এ ব্যাপারে খুচরা বাজারে প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা দরকার।

মরিচ্যার পাগলির বিল এলাকার বাসিন্দা বাবুল মিয়া মাহমুদ বলেন, পুরো বাজারে যেদিকে তাকাই শুধু তরমুজ আর তরমুজ। কোনো জিনিস বাজারে বেশি থাকলে তার দাম কম থাকার কথা। কিন্তু এই রমজানে উখিয়ায় তরমুজের বাজারে হয়েছে উল্টো। বাজারে তরমুজ যেমন বেশি, দামও তেমন বেশি। একটি বড় সাইজের তরমুজ দাম চাচ্ছে ৭০০টাকা। আবার ছোট তরমুজ নিলে আমার হবে না কারণ আমার পরিবারে সদস্য বেশি। তাই আর তরমুজ কেনা হয়নি আজকের মত।

এদিকে তরমুজের চাহিদা অনুযায়ী জোগান থাকার পরও কেন তরমুজ চড়া দামে বিক্রি করছেন এ প্রশ্নের উত্তর দিতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা। বেশ কয়েকজন বিক্রেতা বলেন, দাম কেন বেশি বলা যাবে না। এই দামে তরমুজ নিতে পারলে আসেন। বাজারে তরমুজ আনতে গাড়ী ভাড়া,লেভার,ইজারাদারের টোল,হাসিল সব মিলিয়ে বাড়তি দাম পড়ে,তাই বিক্রি করতেও বাড়তি।

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইন্সট্রাক্টর নুরুল আলম বলেন, ‘আমরা প্রথম রমজান থেকে সয়াবিন তেল নিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে ছিলাম। এরপর লেবু নিয়ে কাজ করেছি।এরপর ইফতার সামগ্রী ও খাদ্যদ্রব্য নিয়ে কাজ করছি।তরমুজের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আমাদের নজরে আসেনি। তবে এখন যেহেতু জেনেছি। এ বিষয়ে আমরা বাজার মনিটরিং করব।