০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

রেশন কমানোসহ পাঁচ কারণেই রোহিঙ্গা শিশুরা চরম পুষ্টিহীনতায় ভোগছেন-ইউনিসেফ

  • শ.ম.গফুর::
  • আপডেট সময়: ০৩:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
  • 41

বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের অনেকেই চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে থাকা এসব শিশুরা দিন-দিন দুর্বল হয়ে পড়ছেন। সিভিয়ার অ্যাকিউট ম্যালনিউট্রিশনে (তীব্র অপুষ্টি) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বেড়েছে প্রায় ২৭ গুণ। বর্তমানে রোহিঙ্গা শিবিরে ১৫ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। যা ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের স্থানচ্যুতি শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।

ইউনিসেফ’র এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে বর্তমানে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন। যার মধ্যে ৫ লাখের বেশি শিশু রয়েছে। এসব শিশুদের মধ্যে অনেকেই তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন। গত বছর প্রায় ১২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছিলো। যাদের ৯২ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছে ইউনিসেফের চিকিৎসায়। তবে খাদ্য সংকট, স্যানিটেশন পরিস্থিতির অবনতি, কলেরা ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব, এবং স্বাস্থ্য সেবার অভাব পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়েছিল। যা ফেব্রুয়ারিতে আরও ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ১ হাজার ৬২ জনে পৌঁছেছে। মূলত বর্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্যানিটেশন সংকট, খাবারের রেশন কমানো এবং নতুন শরণার্থীদের আসার কারণে এমনটা ঘটেছে। বিশেষ করে নতুন করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বর্তমানে আমরা রোহিঙ্গা মায়েদের ও শিশুদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে পারছি। কিন্তু চাহিদা বৃদ্ধির সাথে তহবিল কমে যাওয়ায় এই সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। খাবারের রেশন আরও কমে গেলে শিশুসহ সকলের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাবে,এই ভয়ে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
ইউনিসেফ’র পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৫ সালে রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ১৪ হাজার ২০০ শিশু তীব্র অপুষ্টিত আক্রান্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্য সেবা এবং পুষ্টি সহায়তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা অব্যাহত থাকা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে এমনটাই দাবী করছেন।

Tag :

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

তথ্য সংরক্ষণ করুন

জনপ্রিয়

উখিয়ায় মালিকবিহীন ১লাখ ৪০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ!

রেশন কমানোসহ পাঁচ কারণেই রোহিঙ্গা শিশুরা চরম পুষ্টিহীনতায় ভোগছেন-ইউনিসেফ

আপডেট সময়: ০৩:০৩:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫

বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গা শিশুদের অনেকেই চরম পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন। উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে থাকা এসব শিশুরা দিন-দিন দুর্বল হয়ে পড়ছেন। সিভিয়ার অ্যাকিউট ম্যালনিউট্রিশনে (তীব্র অপুষ্টি) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বেড়েছে প্রায় ২৭ গুণ। বর্তমানে রোহিঙ্গা শিবিরে ১৫ শতাংশেরও বেশি শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। যা ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের স্থানচ্যুতি শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।

ইউনিসেফ’র এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের শরণার্থী শিবিরে বর্তমানে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছেন। যার মধ্যে ৫ লাখের বেশি শিশু রয়েছে। এসব শিশুদের মধ্যে অনেকেই তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন। গত বছর প্রায় ১২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত ছিলো। যাদের ৯২ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছে ইউনিসেফের চিকিৎসায়। তবে খাদ্য সংকট, স্যানিটেশন পরিস্থিতির অবনতি, কলেরা ও ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব, এবং স্বাস্থ্য সেবার অভাব পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৫ শতাংশ বেড়েছিল। যা ফেব্রুয়ারিতে আরও ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ১ হাজার ৬২ জনে পৌঁছেছে। মূলত বর্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন, স্যানিটেশন সংকট, খাবারের রেশন কমানো এবং নতুন শরণার্থীদের আসার কারণে এমনটা ঘটেছে। বিশেষ করে নতুন করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।
জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বর্তমানে আমরা রোহিঙ্গা মায়েদের ও শিশুদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে পারছি। কিন্তু চাহিদা বৃদ্ধির সাথে তহবিল কমে যাওয়ায় এই সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। খাবারের রেশন আরও কমে গেলে শিশুসহ সকলের চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাবে,এই ভয়ে রোহিঙ্গা পরিবারগুলো অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
ইউনিসেফ’র পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৫ সালে রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ১৪ হাজার ২০০ শিশু তীব্র অপুষ্টিত আক্রান্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্য সেবা এবং পুষ্টি সহায়তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা অব্যাহত থাকা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে এমনটাই দাবী করছেন।