
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আগে জাতীয় নির্বাচন হবে।ঐ নির্বাচনে যিনি সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তিনি হবে এমপি।একই আসনে অংশগ্রহণকৃত প্রাথীদের মধ্যে ২য়,৩য়,….৩০ম বা তথোর্ধ পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যন,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান,ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বার নির্বাচিত হবেন।আগ্রহী সকল প্রার্থীগণ একই নির্বাচনে একই আসনের প্রার্থী হবেন।
এতে করে নির্বাচন আয়োজনে সরকারি খরচ যেমন কমবে তেমনি প্রার্থীদেরও নির্বাচনি খরচ এবং কষ্ট দুটাই কমবে।অন্যদিকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে না জাতীয় নির্বাচন আগে তা নিয়েও আর কোন প্রশ্ন থাকবেনা। সংশ্লিষ্ট আসনের সকল প্রার্থীদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার উন্নয়ন হবে।পরবর্তীতে এমপি,উপজেলা বা ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের মাঝে বোঝাপড়া ভালো থাকবে;এলাকার উন্নয়নে সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গ্রহনযোগ্য ভুমিকা রাখতে পারবেন। সম্মানিত ভোটাররাও এক ভোটেই একাধিক প্রতিনিধি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।তাদেরও সময়,শ্রম ও টেনশন কমবে।
হ্যাঁ আরেকটা প্রশ্ন অবশ্যই থেকে যায়,এক ইউনিয়নের বা ওয়ার্ডের প্রার্থী অন্য ওয়ার্ডে চেয়ারম্যান-মেম্বার হবেন কিভাবে? সেক্ষেত্রে ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রার্থীদের মধ্যে একটা তুলনামূলক রেজাল্ট শীট তৈরি করে তার মধ্য থেকে উপরিউক্ত পদ্ধতিতে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি নারী মেম্বার,ইউপি পুরুষ মেম্বার ইত্যাদি নির্বাচিত হবেন।চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ক্ষেত্রে স্বস্ব ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডকে প্রাধান্য দেয়া যেতে পারে।
নারী প্রার্থিদের মধ্য থেকে উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউপি নারী মেম্বারগণে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ ভোটের আনুপাতিক হারে একই পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে।সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী হবেন মেয়র অন্যান্য নিকটতম প্রার্থীগণ যথাক্রমে কাউন্সিলর,নারী কাউন্সিলর ইত্যাদি নির্বাচিত হবেন।
আরেকটা বিষয় গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিতে হবে তাহল নির্বিচিত সকল প্রতিনিধিদের জন্য জনসেবা বিষয়ক কার্যক্রমের উপর বিশেষ মৌলিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে এবং সময়ে সময়ে সতেজিকরণ প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে।এতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষক হিসাবে মনোনীত করা যেতে পারে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও শপথ গ্রহনকৃত সকল প্রার্থীদের বছর শেষে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগনের মাধ্যমে জনমত জরিপ করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।যে সকল প্রার্থীগণ জনমত জরিপে সন্তোষজনক ফলাফল অর্জন করবেন তারা স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত হবেন।
তাছাড়া নির্বাচিত ও শপথ গ্রহনকৃত সকল প্রতিনিধিদের জন্য সরকারি ভাতার পরিমান বাড়িয়ে বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও মানসম্মত পরিমাণে উন্নিত করতে হবে।যাতে জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত সামগ্রীতে বেআইনি ভাগ বসাতে না হয়।
সকল সংস্কার যেহেতু প্রাথমিকভাবে অবাস্তব বা কাল্পনিক মনে হয়,স্বভাবতই এই সংস্কার প্রস্তাবও প্রথমদৃশ্যে কঠিন মনে হলেও অসম্ভব কিছু নয় মনে করি। আমাদের খোলা মনে সংস্কার চাওয়া উচিত এবং রাষ্ট্রযন্ত্র সংস্কারের পূর্বে নিজেদের অন্তর সংস্কার করা প্রয়োজন। নির্বাচন সংস্কার কমিশন এই বিকল্প প্রস্তাবের পক্ষে জনমত ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখতে পারেন।আশাকরি ভালো কিছু হবে।
লেখক…✍️
জিয়াউর রহমান মুকুল,
মানবিক ও উন্নয়ন কর্মী।